Skip to main content

যাকাত আদায় করার যুগোপযগী কিছু পদ্ধতি



 যাকাত আদায় করার যুগোপযগী কিছু পদ্ধতি

লেখক;মুহাম্মদ গোলাম পাঞ্জেতান

আসসালামু আলাইকুম।আশা করি সবাই ভালো আছেন।সামনে আসছে মাহে রমজান।মুসলমান মাত্রই এ মাসের জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে।কারণ এটা কোরআনের মাস।সিয়াম-সাধনার মাস।ইসলামের মাঝে এ মাসের ফজিলতের শেষ নেই।সাধারণ সময়ে একটি সোয়াবের যায়গায় রমজান মাসে ৭০টি সোয়াব দান করে মহান আল্লাহ।আল্লাহ জাল্লাজালালুহু সব সময় চায় তার বান্দাদের মুক্তির ব্যবস্থা করে দিতে।বান্দা কিভাবে নেক বেশি করবে সেই ব্যবস্থা আল্লাহ পাক বেশি করে দেন এই রমজান মাসে।শয়তানের ওয়াসওয়াসাও কম থাকে এ মাসে।যার ফলে মানুষ ইবাদাত করে বেশি।সোয়াব বেশি হওয়ার কারনে সামর্থ্যবান মুসলমান রমজান মাসেই “যাকাত”দিতে পছন্দ করেন বেশি।ইসলামে ৫টি মূল স্তম্ভের মাঝে “যাকাত” অন্যতম।তাই আজকের ব্লগটি যাকাত নিয়ে।
কিভাবে যাকাত দিবেন,কোথায় দিবেন,কাদের দিবেন,কি পদ্ধতিতে দিবেন এ নিয়ে বিস্তারিত লেখার প্রয়াশ পাচ্ছি।পুরোটা পড়ে সংরক্ষণে রাখুন।আশা করি কাজে আসবে।
যাকাত নিয়ে কোরআন-হাদিসের কিছু বানীঃ

যাকাত নিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা কোরআন পাকে ইরশাদ করেন;
“সফলতা অর্জন করে তারাই,যারা যাকাত আদায় করে।(সুরা আল মুমিনুন,আয়াত ০৪)


যাকাত নিয়ে রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চমৎকার হাদিস রয়েছেনবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন;
“তিবরানী আওসাত এ হযরত ফারূকে আযম রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করে,হুজুর নাবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহিব ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,জলে স্থলে যে সম্পদ ধ্বংস হয় তা যাকাত আদায় না করার কারণেই ধ্বংস হয়ে থাকে।“
অন্য হাদিসে নাবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,যে গোত্র যাকাত আদায় করবেনা,আল্লাহ সে জাতিকে দুর্ভিক্ষে নিমজ্জিত করবেন।

প্রিয় পাঠক/পাঠিকা,
কোরআন-হাদিসের এই বানী গুলো পড়ে নিশ্চয় বুঝে ফেলেছেন ইসলামের যাকাতের গুরুত্ব।সুতরাং আপনার যদি যাকাত দেয়ার সামর্থ্য থাকে তাহলে অবশ্যই যাকাত আদায় কয়ার নিয়ত করে নিন।
যাকাত কাদের দিবেন!

যাকাত দেয়ার খাত ৭টি। (১)ফকির(২)মিসকিন (৩)যাকাত উত্তোলণকারী (৪) মুক্তিপনের র্তযুক্ত গোলাম (৫)ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি (৬)আল্লাহর রাস্তায় (৭) মুসাফির।
আপনি এই ৭ প্রকারের মানুষকে যাকাত দিতে পারবেন।তবে বর্তমানে যাকাত দেয়ার সিষ্টেম এ অনেক গ্যাপ দেখা যাচ্ছে।যার ফলে যাকাতের মূল কাজটি আদায় হচ্ছেনা।বর্তমানে কিছু মানুষ যাকাত দেয়ার নাম করে কয়েক হাজার মানুষকে সস্তা কাপড় বা ২০০-৫০০টাকা দিয়ে বিদায় করে দিচ্ছে।এর মাধ্যমে সে অনেক লোক কে দিচ্ছে।যার ফলে তার নাম হচ্ছে ঠিকই কিন্তু দরিদ্রতা কমছেনাতার যাকাত ও আদায় হচ্ছেনা।
আসুন যেনে নেই কাকে যাকাত দিবেন & কি পদ্ধতিতে;

v বর্তমান যুগে ফকির বা মিসকিন পাওয়া খুবই দুষ্কর।আমরা ফকির বলে যেসব লোককে ভিক্ষা দেই তাদের বেশিরভাগই আদতে ফকির বা মিসকিন না।বাংলাদেশে ফকির কিছু পাওয়া গেলেও মিসকিনের সংখ্যা খুবই কম।‘ফকির’ বলা হয় যার কাছে চলার জন্য কোনো মাল আছে আর ‘মিসকিন’ বলা হয় যার আছে কিছুই নেই।সুতরাং ফকির বা মিসকিন কে যাকাত দিতে গেলে সাবধানে থাকতে হবে।দেখতে হবে সে আসলেই কি ফকির বা মিসকিন নাকি।যদি সে আসলেই ফকির বা মিসকিন হয়ে থাকে তাহলে তাকে ৫০০-১০০০ দিয়ে বিদায় করে দেয়ার কোন মানে নেই।তাকে এমনভাবে যাকাত দিবেন যেন আগামীবার তার আর যাকাত নিতে না হয়।আপনার যাকাতের অর্থ্ দিয়ে তার একটি নিজস্ত কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করে দিবেন।

v আপনার কষ্টার্জিত সম্পদের যাকাত দিতে পারেন ঋনগ্রস্থ ব্যক্তিকে।কারণ ঋণ বড়ই খারাপ জিনিস।ঋণ মানুষকে ছোট করে রাখে।তাই প্রকৃত ঋনগ্রস্ত ব্যক্তিকে যাকাত দিয়ে তার বোঝা হালকা করুন।তবে হ্যা!এখানে কোন ঋণগ্রস্ত কে বুঝানো হয়েছে তাও আপনার বুঝতে হবে।ঋণগ্রস্ত বলতে এমন কাউকে বুঝায়,যার এতটুকু পরিমান কর্জ আছে যা বের করে নিলে নেসাব পরিমান অবশিষ্ট থাকেনা।সুতরাং,বুঝতেই পেরেছেন সব ঋণগ্রস্তই যাকাত,নিতে পারবেনা,শুধুমাত্র যেসব ঋনগ্রস্তের নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই তারাই শুধু যাকাত নিতে পারবে।
অনেকে যাকাত মাদ্রাসায় দিয়ে থাকেন।আদতে মাদ্রাসায় যাকাত দেয়া যাবেনা।দিতে হবে সেই মাদ্রাসার ছাত্র/ছাত্রীকে,যে যাকাত নেয়ার যোগ্যতা রাখে।তাকে মালিক করে দিতে হবে।পরবর্তীতে যে যদি মাদ্রাসায় দেয় সেটা ভিন্ন কথা।তাই আপনারা যারা মাদ্রাসায় যাকাত দিবেন ভাবছেন আপনারা সরাসরি মাদ্রাসায় না দিয়ে বরং মাদ্রাসার গরিব,এতিম,লিল্লাহ বোডিং বা প্রকারের কাউকে পেলে তাকে দিয়ে দিবেন।তাহলেও আদায় হবে।

আসুন যত্রতত্র যাকাত না দিয়ে একটু গুছিয়ে যাকাতটা দেই।যেন যাকাত প্রনয়নের মূল উদ্যেশ্য হাছিল হয়।একটি বছর সঠিক রূপে যাকাত দিলে বাংলাদেশে পরবর্তী বছরে যাকাত নেয়ার লোক ৭০% কমে যাবে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।তাই যাকাত দিন সঠিক নিয়মে।যাকাত নিয়ে আরো বিস্তারিত পড়তে এই www.amariman.blogspot.com এর সাথেই থাকুন।

আর হ্যা! যাকাত এমন কোনো মাদ্রাসা/প্রতিষ্ঠানে দিবেন না যেখানে জঙ্গি বা নবী-ওলি বিদ্বেষী তৈরি হয়।এমন মাদ্রাসার ছাত্র/ছাত্রীকে যাকাত দিবেন,যেখানে নবী আদর্শের চর্চা হয়।


Comments

Popular posts from this blog

বাংলাদেশের গর্ব নতুন আজহারী আব্দুল মোস্তফা রাহিম

বিশ্বের  সবচেয়ে  প্রাচীন  ইসলামিক  বিশ্ববিদ্যালয়  থেকে  গ্রেজুয়েশন  শেষ  করে  দেশে  ফিরে  ইসলাম  প্রচার  করছেন  আল্লামা  বাকী  বিল্লাহ  রহঃ  এর  বড়  সাহেবজাদা  আব্দুল  মোস্তফা  রাহিম   আল আজহারী। জন্ম :  ১৫  সেপ্টেমবর   ১৯৯১ ইং। বাবা :  আল্লামা  বাকী  বিল্লাহ  রহঃ । পড়ালেখা :  জামেয়া  গাউছিয়া  তৈয়্যবিয়া  তাহেরিয়া   মাদ্রাসা , জামেয়া  আহমাদিয়া  সুন্নিয়া , কাদেরিয়া  তৈয়্যবিয়া  আলিয়া কামিল   মাদ্রাসা ,  আল আজহার  বিশ্ববিদ্যালয়। দ্বীনি খেদমত :  বাংলাদেশের   প্রায়   সব  যায়গায়  উনার  পরিচিতি  বিস্তৃত।ওয়াজ  মাহফিলের  মাধ্যমে  ইসলামের  আলোচনা  দেশ বিদেশে  করে থাকেন।এ ছাড়াও  বিজয়  টিভি  এর  নিয়মিত  আলোচক এবং ঢাকার  হাবিবিয়া  মসজিদের ...

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ইসলামের কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস দেখুন

           নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ইসলামের কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস দেখুন                                                                            নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চুল মুবারাক                                                                                          হাজরে আসওয়াদ                                                               ...