প্রাপ্তির রাত,শবে বরাত
লেখক;মুহাম্মদ
গোলাম পাঞ্জেতান
শিক্ষার্থী; শরিয়া
আল ইসলামিয়া,প্রথম বর্ষ,আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়,কায়রো,মিশর।
প্রথমেই মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি,যিনি তার গুনাহগার বান্দাদের বিশেষ বিশেষ রাত উপহার দেন ক্ষমা প্রার্থনার জন্য।সাথে সাথে লক্ষ লক্ষ দুরুদ সালাম পেশ করছি হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহান দরবারে,যিনি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত মহান নেয়ামতগুলো আমাদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।
পবিত্র ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ এক মহিমান্বিত রাত।এ রাতে মহান আল্লাহ তার অজস্র গুনাহগার বান্দাকে ক্ষমা করে দেন।এ রাতের দোয়া কবুল করা হয়।এ রাতকে উপমহাদেশে আমরা ‘শবে বরাত’
নামে চিনি।‘শবে বরাত’ এবং ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ একই রাত।পার্থক্য শুধু ভাষার ভিন্নতা।এ মহান রাত যুগে যুগে অতি গুরুত্বের সাথে পালিত হয়ে আসছে।তবে বর্তমান সময়ে
‘শবে বরাত’
এর অস্তিত্ব নিয়ে এমন কিছু উদ্ভট কথা শুনতে পাই,যা আমাদের বাপ-দাদারাও কখনো শুনেনি।অনেকের কাছে এ রাতের বিশেষ গুরুত্ব নেই।তবে আসলেই কি
‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ বা ‘শবে বরাত’
এর কোনো গুরুত্ব নেই? এ রাতের গুরুত্ব কি কোরআন ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়? নাকি মহান আল্লাহর দেয়া এই বিশেষ রাত গুনাহগার বান্দাদের জন্য পরম পাওয়া। 
ইনশা আল্লাহ এ বিষয়ে নিজের ক্ষুদ্র জ্ঞানুসারে এই লেখনীতে আলোচনা করবো। 
وما توفيقي
الا بالله                                                   
নবী
কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
বিশেষ গুরুত্ব পবিত্র শাবান
মাসকে ঘিরে ঃ রহমাতুল্লিল আলামিন হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু  আলাইহি
ওয়াসাল্লাম
পবিত্র
শাবান
মাসকে
অত্যন্ত
গুরুত্ব
দিতেন।এ মাসে
তিনি
এত
নফল
রোজা
রাখতেন
যে, মাহে
রমজানের
পর
এত
রোজা
অন্য
কোনো
মাসে
রাখতেন
না। এ বিষয়ে উম্মাহাতুল মুমিনিন হযরত সাইয়্যেদা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার একটি হাদিস প্রণিধানযোগ্য। আম্মাজান
আয়েশা
রাদিয়াল্লাহু
আনহা
বলেন-
كان رسول
الله صلى الله عليه وسلم يصوم شعبان و رمضان ويتحرى الإثنين والخميس
(আন নাসায়ী,৪/১০৩)
এ ছাড়াও
আম্মাজান
উম্মে
সালমা
রাদিয়াল্লাহু
আনহা
বলেন
أنه لم يكن
يصوم من السنة شهرا تاما إلا شعبان يصله برمضان 
(আবু দাউদ ২/৩০০)
নবী
কারিম
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি
ওয়াসাল্লাম
পবিত্র
শাবান
মাসকে
এত
গুরুত্ব
দিয়ে
রোজা
রাখার
কারণ
বিশ্লেষণ
করতে
গিয়ে
অনেক
ওলামায়ে
কেরাম
পবিত্র
লাইলাতুন
নিসফি
মিন
শাবানের
কারণ
উল্ল্যেখ
করেছেন। এছাড়াও নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবান মাসে অত্যাধিক রোজা রাখার ব্যাপারে বলেন 
ذاك الشهر
يغفل الناس عنه بين رجب و رمضان وهو شهر يرفع فيه الأعمال إلى العالمين.فأحب أن
يرفع عملي وأنا صائم
(মুসনাদে আহমদ ৫/২০১)
অর্থ্যাৎ ; মানুষ
রজব
ও রমাদান
মাসের
মাঝে
যে
মাস
আছে
তাতে
আমলের
ব্যাপারে
গাফেল
হয়ে
যায়।এবং
এটা
সে
মাস,যে
মাসে
মানুষের
আমল
আল্লাহর
কাছে
পেশ
করা
হয়।সুতরাং
আমি
পছন্দ
করি
যে,তখনই
আমার
আমল
পেশ
করা
হউক
যখন
আমি
রোজাদার।
এ কয়েকটি
হাদিস
বিশ্লেষণ
করে
ওলামায়ে
কেরামের
মত
হচ্ছে, এ মাসে
মানুষের
আমল
আল্লাহর
কাছে
পেশ
করা
হয়
তাই
এ মাসে
নবী
কারিম
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি
ওয়াসাল্লাম
বেশি
বেশি
রোজা
রাখতেন।আর
কিছু
ওলামায়ে
কেরাম
বলেন ,পবিত্র
লাইলাতুন
নিসফি
মিন
শাবানেই
মানুষের
আমল
আল্লাহর
কাছে
পেশ
করা
হয়।ইনশা
আল্লাহ
এ বিষয়ে
সামলে
বিস্তারিত
আলোকপাত
করা
হলো।
লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান
সম্পর্কিত কিছু হাদিস
তার গ্রহনযোগ্যতা
হওয়ার বিশ্লেষণঃ
পবিত্র
লাইলাতুন
নিসফি
মিন
শাবান
সম্পর্কিত
অনেক
গুলো
হাদিস
বিভিন্ন
বিখ্যাত
হাদিসের
কিতাবে
লিপিবদ্ধ
করা
হয়েছে।তার
মাঝে
কিছু
হাদিস
রয়েছে
সহিহ
পর্যায়ের,কিছু
হাদিস
রয়েছে
হাসান
পর্যায়ের,কিছু
হাদিস
রয়েছে
মাওযু
পর্যায়ের,আর
কিছু
হাদিস
রয়েছে
মিথ্যা
বানোয়াট।তবে
আমরা
সকলেই
জানি,আমল
করার
ক্ষেত্রে
একটি
মাওযু
হাদিসই
যথেষ্ট।যদি
না
এর
বিপরীতে
কোনো
সহিহ
হাদিস
না
থাকে।লাইলাতুন
নিসফি
মিন
শাবান
এর
জন্য
মওযু
হাদিসতো
বটেই,বরং
অনেক
গুলো
সহিহ
হাদিস
ও বিদ্যমান।তার
কিছু
বিশ্লেষণ
দেখা
যাক।
১ ; হাদিসে
মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু
আনহু ; হযরত
মুয়াজ
ইবনে
জাবাল
রাদিয়াল্লাহু
আনহুর
হাদিস
লাইলাতুন
নিসফি
মিন
শাবান,নবী
কারিম
সাল্লাল্লাহু
আলাইহিই
ওয়াসাল্লাম
يطلع الله
إلى خلقه في ليلة النصف من شعبان،فيغفر لجميع خلقه إلا لمشرك أو مشاحن
অর্থ্যাৎ; মহান
আল্লাহ
তায়ালা
তার
বান্দাদের
জন্য
শাবান
মাসের
মধ্য
রজনীতে ( মহান
আল্লাহর
কুদরত
অনুসারে ) নিচে
নেমে
আসেন।অত;পর
সকল
বান্দাদের
ক্ষমা
করে
দেন
তবে
মুশরিক  এবং পরস্পরে ঝগড়া লাগানো ব্যক্তি ব্যতিত।(১)
১; এই
হাদিসটি
ইবনে
হিব্বান
সহিহ
হিসাবে
বর্ণনা
করেছেন। এবং আল্লামা ইবনে হাজার হাইতামি রহমাতুল্লাহি আলাইহ তার কিতাব “আজ জাওাজির” এ বলেছেন এই হাদিসের সনদে কোনো সমস্যা নেই।এবং
এ হাদিসটি
বর্ণনা
করা
হয়েছে
ইমাম
তাবরানির “মুজামুল
কাবির (২/১০৮) “ “মুজামুল
আওসাত
(৮/৩০৬)” ,ইবনে হিব্বান (১২/৪৮১), আল্লামা আবু নুয়াইম এর “হিলয়াতুল আওলিয়া” (৫/১৯১) এবং ইমাম বায়হাকির “শুয়াবুল ঈমান  ৩/৩৭৮
– ৩৮৭”গ্রন্থে ।
 এ হাদিসের রাবিদের
মাঝে
একজন
হলেন “মাকহুল”।অনেকে বলে থাকেন উনি গ্রহনযোগ্য রাবি না।তবে এ কথা সত্য নয়।কারণ
উনি
সিকাহ
রাবি
ছিলেন
এবং
যুগের
প্রখ্যাত
ফকিহ
ছিলেন।ইবনে
হিব্বান
তার
থেকে
হাদিস
গ্রহন
করেছেন।এবং
আবু
দাউদ
শরিফেও
তার
থেকে
হাদিস
বর্ণনা
করা
হয়েছে।দলিল
আবু
দাউদ
শরিফ
৩/২১। এবং ইবনে হাজার আসকালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহ তার কিতাব “তাবাকাতুল মুদাল্লিসিন (১/৪৬)” কিতাবে “মাকহুল সমপর্কে বলেন,তিনি সাম দেশের প্রখ্যাত ফকিহ ছিলেন,এবং তাবিয় হিসাবে মশহুর ছিলেন।সুতরাং
এ হাদিস
সহিহ
হিসাবে
মুহাদ্দিসিনে
কেরাম
গ্রহণ
করেছেন।
২ ; হাদিসে
ওসমান ইবনে আবিল আস
রাদিয়াল্লাহু আনহু ; হযরত ওসমান ইবনে আবিল আস রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদিসটি লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান এর ফজিলতের ব্যাপারে প্রণিধানযোগ্য।হযরত ওসমান ইবনে আবিল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর থেকে বর্ণনা করেন।নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন  
إذا كان ليلة
النصف من شعبان، ناد المنادى : هل من مستغفر فأغفر له، هل من سائل فأعطيه.فلا يسأل
الله عز وجل أحد شيأ إلا أعطاه، إلا زانية بفرجها أو مشرك
 অর্থ্যাৎ; যখন লাইলাতুন
নিসফি
মিন
শাবান
আগমণ
করে,একজন
আহবানকারী
আহবান
করে
বলে,কেউ
কি
আছো
ক্ষমা
প্রার্থণাকারী,তাকে
ক্ষমা
করা
হবে।কারো
কি
কোন
কিছু
চাওয়ার
আছে? তাকে
তা
প্রদান
করা
হবে।অত;পর
কাউকে
মহান
আল্লাহ
তায়ালা
খালি
ফিরাবেন
না,শুধুমাত্র
জেনাকারী
ও মুশরিক
ব্যতিত।
মানদণ্ডের
ক্ষেত্রে
এ হাদিসটি
সহিহ। হাদিসের পরিভাষায় এই হাদিসের “রিজাল” বের করেছেন ইমাম খারায়িতি। তার “মাসাইউল আখলাখ (১/৪৯৬)” কিতাবে
এই
হাদিসটি
শক্তিশালি
সনদে
বর্নিত
হয়েছে।সনদটি
হলো ,হযরত
আব্দুল্লাহ
ইবনে
আহমদ
ইবনে
ইবরাহিম
আদ
দুরুকী
বর্ণনা
করেছেন
মুহাম্মদ
ইবনে
বুকার
থেকে,তিনি
বর্ণনা
করেছেন
মারহুম
আল
আত্তার
থেকে,তিনি
বর্ণনা
করেছেন
দাউদ
ইবনে
আব্দুর
রহমান
থেকে,তিনি
বর্ননা
করেছেন
হিশাম
থেকে,তিনি
হাসান
বসরি
থেকে,তিনি
ওসমান
ইবনে
আবি
আস
থেকে।তবে
এ হাদিসের
একজন
রাবীর
ক্ষেত্রে
কিছু
কিছু
মুহাদ্দিসিনের
কেরাম
প্রশ্ন
তুলেছেন
তিনি
হলেন
ইবনে
ইবরাহিম
আদ
দুরুকী।তবে
মুহাদ্দিসিনের
মাঝে
অনেকেই
তাকে
সিকাহ
রাবি
হিসাবে
বর্ণনা
করেছেন।যেমন
ইবনে
আবি
হাতিম
তার “জারহ
ও তাদিল” কিতাবে
তাকে
সিকাহ
রাবী
হিসেবে
বর্ণনা
করেছেন।এছাড়াও
আরো
কিছু
কিতাবে
তাকে
সিকাহ
রাবি
হিসাবে
বর্ণনা
করা
হয়েছে।যেমন “ আস
সিকাহ (৬/২৮৬), “মারিফাতুস
সিকাহ (২/৩২৬)
এই
হাদিসের
মাধ্যমের
আমরা
জানতে
পারলাম
যে,পবিত্র
লাইলাতুন
নিসফি
মিন
শাবান
এর
গুরুত্ব
ও তাৎপর্য
অনেক।এবং
গুনাহ
মাফ
পাওয়ার
এক
অন্যন্য
রাত
এই
মাহে
শাবানের
১৪
তম
দিবাগত
রাত।এই
বিষয়ে
আরো
অনেক
হাদিস
বিদ্যমান।তবে
এই
লেখনীর
কলেবর
বৃদ্ধি
হয়ে
যাবে
তাই
হাদিস
নিয়ে
লেখা
এখানেই
সমাপ্ত
করতে
চাই।
বিভিন্ন
মাজহাবে লাইলাতুন নিসফি
মিন শাবান সম্পর্কে আলোচনাঃ
সব
মাজহাবেই
লাইলাতুন
নিসফি
মিন
শাবান
নিয়ে
আলোচনা
করা
হয়েছে।মাজহাবের
আলোচনা
করতে
গেলে
দুটি
বিষয়
আলোকপাত
করতে
চাই।
১; লাইলাতুন
নিসফি
মিন
শাবানের
ফজিলত।
২; লাইলাতুন
নিসফি
মিন
শাবানের
রাত
পালনের
পদ্ধতি।
প্রথমত
লাইলাতুন
নিসফি
মিন
শাবান
এর
ফজিলতের
ক্ষেত্রে
চার
মহান
ঈমাম
এর
মাঝে
দুজন
ঈমাম
সরাসরি
হাদিস
বর্ণনা
করেছেন। 
ঈমাম
শাফেয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহির মত; বিখ্যাত
ফকিহ,শাফেয়ী
মাজহাবের
প্রতিষ্ঠাতা
ঈমাম
শাফেয়ী
রহমাতুল্লাহি
আলাইহ
তার
বিখ্যাত
কিতাব “আল
উম্ম (১/২৩১)” এর
মাঝে
তিনি
একটি
হাদিস
বর্ণনা
করেছেন।তিনি
বলেন,আমার
কাছে
বর্ণনা
করা
হয়েছে
যে,পাঁচটি
রাতের
দোয়া
কবুল
করা
হয়ে
থাকে।সেগুলো
হল ; দু
ঈদের
রাতে,জুমার
রাত,রজব
মাসের
প্রথম
রাত,এবং
শাবান
মাসের
১৪
তম
দিবাগত
রাতে।
ঈমাম
আহমদ ইবনে হাম্বলের মত; ইমাম
তাবরানী
রহমাতুল্লাহি
আলাইহ
তার
কিতাব “আদ
দুয়া (১/১৯০) “ বলেন, আমি
আব্দুল্লাহ
ইবনে
আহমদ
ইবনে
হাম্বল
হতে
বর্ণনা
করেছিই।তিনিও
লাইলাতুন
নিসফি
মিন
শাবানের
ফজিলত
সমপর্কিত
হাদিস
বর্ণনা
করেছেন।
তবে
শবে
বরাত
এর
রাত
পালন
করার
ক্ষেত্রে
চার
মাজহাব
বিভিন্ন
পদ্ধতি
বর্ণনা
করেছেন।
হানাফী
মাজহাব ; হানাফী মাজহাবের প্রসিদ্ধ ফকিহ আল্লামা হাসকাফি রহমাতুল্লাহি আলাইহি দুরুর মানসুর(২/২৫) কিতাবে বলেন “ দু ঈদের রাত,শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত,রমজানের শেষ দশ রাত,জিলহজ্ব মাসের প্রথম রাত,সারারাত অথবা রাতের বেশিরভাগ সময় অত্যাধিক গুরত্ব দিয়ে ইবাদাত করবে।
মালেকী
মাজহাব; মালেকি মাজহাবের অন্যতম বিখ্যাত ফকিহ ইমাম ইবনুল হজ তার কিতাব “মুদখাল (১/২৯৯,৩১৩) এ লাইলাতুন নিসফি মিন শাবানের ফজিলত নিয়ে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন 
إن ليلة
النصف من شعبان ولا شك أنها ليلة مباركة عظيمة القدر عند الله تعالى قال الله
تعالى 
فيها يفرق كل
أمر حكيم (سورة الدخان)
নিশ্চয়
লাইলাতুন
নিসফি
মিন
শাবান
রাতটি
অনেক
বরকতপূর্ণ,মহান
ও ভাগ্য
রজনী।আল্লাহ
তায়ালা
বলেন “নিশ্চয়
এর
মাঝে
বন্টন
হয়
সব
মহান
আদেশ
সমূহ”
শাফেয়ী
মাজহাব; শাফেয়ী মাজহাবের বিখ্যাত ফকিহ আবু আমর ইবনে সালাহ লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান এর ব্যাপারে বলেন যে,এই রাতের ফযিলত অত্যাধিক এবং রাত জেগে ইবাদাত করা মুস্তাহাব।তবে এটা নিতান্তই একাকী আমল,জামাত সহ কোনো আমল নেই।(আব বাহিস ১/৪৪)
হাম্বলি
মাজহাব; হাম্বলি মাজহাবের ফকিহরাও ফজিলত ও রাত জেগে আমলের ব্যাপারে মতামত প্রকাশ করেছেন।তন্মধ্যে আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আস সামারি তার কিতাব ‘মুস্তাওিব’,ইবনে মুফলেহ এবং হাফেজ ইবনে রাজাব সহ অনেক ওলামায়ে কেরাম এ রাতে ইবাদাত করার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করেছেন। এমনকি ইবনে
তাইমিয়া সাহেবও তার
ফতোয়ায়
লাইলাতুন
নিসফি
মিন
শাবানের
ফজিলত
সমপর্কিত
হাদিস
বর্ণনা
করেছেন।দলিল “আল
মুবদা (৩/৫৯, ৩/৮৮)”
লেখার
কলেবর
বৃদ্ধি
হওয়ার
ভয়ে
হাদিস
শরিফ
আর
উল্ল্যেখ
করলাম
না।তবে
বিশ্বাসীদের
জন্য
এই
কতিপয়
হাদিসই
যথেষ্ট।তবুও
আগ্রহী
কেউ
এ বিষয়ে
আরো
বিস্তারিত
গবেষণা
করতে
পারে।তবে
অবশ্যই
কোনো
দল
কানা
হয়ে
নয়,মহান
আল্লাহর
রহমত
তালাশের
উপায়
অন্বেষণকারী
হিসাবে।তাহলে
‘শবে বরাতে’র অস্তিত্ব খুজে পাবে ইনশা আল্লাহ।
এবার
আমার কিছু কথা; উপরোল্লোখিত লেখায়
অনেক
গুরুগম্ভীর
আলোচনা
করেছি।শরিয়তের
মধ্যে
এই
মহিমান্বিত
রাতের
গুরুত্ব
প্রমাণ
করার
চেষ্টা
করেছি।তবে
এবার
কিছু
নিজের
কথা
বলি।ছোট
বেলা
থেকেই
আমরা
‘শবে বরাত’ গুরুত্ব সহকারে পালন অরি।এক
‘শবে বরাত’ চলে গেলে সারা বছর আরেক ‘শবে
বরাত’ আগমনের
অপেক্ষা
করি।তবে
ছোট
বেলার
‘শবে বরাত’ পালন আর বড় বেলার ‘শবে বরাত’ পালনের মাঝে বিস্তর তফাট।নিষ্কুলুষ জীবন কাটে ছোট বেলায়।যত
বড়
হচ্ছি
নিজের
গুনাহর
পরিমান
বেড়েই
চলছে।
নবিগন
ছাড়া
মানুষ
হিসাবে
কেউই
বেগুনাহ
মাসুম
না।আমরা
যেমন
পাপ
কা্মাই
করি,তেমন
মহান
আল্লাহ
তায়ালা
আমাদের
উপর
দয়া
পরবশ
হয়ে
বিভিন্ন
রাত
উপহার
দিয়ে
থাকেন।তেমনই
একটা
রাত
‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ বা ‘শবে
বরাত’।ডুবন্ত মানুষ যখন তার জীবন বাচানোর জন্য আর কোন উপায় না দেখে এক টুকরো কাঠ ধরেও বাচতে চায়।আমরা
গুনাহগার
রা
সেই
ডুবন্ত
মানুষ
থেকেও
বড়
বিপদে।তাই
এমন
বিপদ
গ্রস্থ
মানুষের
জন্যেই
শুকনো
কাঠের
মত
বার
বার
ফিরে
আসে ‘শবে
বরাত’।পাথরের চেয়েও শক্ত মন সেদিন মহান রবের দরবারে দু হাত উচিয়ে কাঁদে কৃত কর্মের জন্য।পরিশুদ্ধ
জীবন
কামনা
করে।
মহান
রবের
সাথে
তার
সমপর্ক
স্থাপন
হয়ে
যায়।হয়ে
যায়
ভালোবাসার
বন্ধন।অনেকে
বলে
শুধুমাত্র
এক
রাতে
কেন? সব
রাতেই
তো
মহান
আল্লাহর
রহমত
পাওয়া
যায়।হ্যা
তাদের
কথা
সত্য,এবং
আমি
একমত।তবে
সেই
অবুঝ
বান্দারা
তো
বুঝে
না।সমাজের
দেখা
দেখি
হলেও
অনেক
অবুঝ
বান্দা
‘শবে বরাতে’র রাতে বেনামাজী হয়ে মসজিদে ঢুকে,নামাজী হয়ে বের হয়।রোনাজারি
করে
শুধুমাত্র
আল্লাহকে
পাওয়ার
জন্য।সেটাই
বা
কম
কিসের! 
তাই
আমার
এই
রচনার
মোদ্দা
কথা
হলো, মহান
আল্লাহ
দয়াবান,ক্ষমাশীল।তিনি
তার
বান্দাদের
ক্ষমা
করতে
কৃপণ
নন। আর ক্ষমারই একটা মজলিসের নাম “লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান বা শবে বরাত”।
মহান
আল্লাহ
এই
রাতের
উসিলায়
আমাদের
ক্ষমা
করুক।মহান
আল্লাহর
দয়া
দিয়ে
ভরপুর
হয়ে
যাক
আমাদের
জীবন।এই
মহান
রাতের
সকল
ভালো
প্রাপ্তি
দিয়ে
জীবনটা
সুন্দর
হয়ে
উঠুক।আমিন।বিহুরমাতি
সাইয়্যিদিল
মুরসালিন. صلوا على
النبي صلى الله عليه وسلم                 
                               

Comments
Post a Comment